গোর্কী । লেনিন । রবীন্দ্রনাথ । বঙ্কিমচন্দ্র । অন্যান্য ভারতীয় মানীষী । অন্যান্য বিদেশী মনীষী
ম্যাকসিম গোর্কী
·
“সংস্কৃতির
ভিত হলো শ্রমজীবী মানুষের দ্বারা অনুষ্ঠিত শ্রম।”
·
“সংস্কৃতি
আমাদের একান্ত নিজস্ব সম্পদ ... আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিরই দান।”
·
“কলম
পরিচালনার সমস্ত চাতুর্য এবং কথিত শব্দের কুশলী ব্যবহারের ক্ষমতা সত্ত্বেও যারা
সংখ্যাগরিষ্টের উপর সংখ্যালঘুর শাসনক্ষমতাকে সমর্থন করে, তাদের আদর্শ আসলে পাশবিক।”
·
“দুনিয়ায় ‘পবিত্র’ বলে যদি কিছু থাকে, তা হলে আমার কাছে তা হচ্ছে মানুষের
নিজের উপরই তার অসন্তোষ, তার আরও ভালো হবার, আরো বড় হবার সাধনা। পবিত্র তার নিজের
হাতে গড়া যাবতীয় বাধার তুচ্ছতার উপর ঘৃণা। আর পবিত্র— তার হিংসা, লোভ, পাপ,
ব্যাধি আর যুদ্ধকে দুনিয়ার বুক থেকে মুছে ফেলার আকাঙ্ক্ষা; আর পবিত্র মানুষের
সৃজনশীল শ্রম।”
·
“শ্রেণী-রাষ্ট্রগুলি পশুশালার ঢংয়ে গড়া। সব প্রাণীরা এখানে
লোহার খাঁচায়-খাঁচায় আবদ্ধ।”
·
“ঘৃণা করতে না-জানলে আন্তরিকভাবে ভালবাসাও যায় না।”
·
“ভারতের সেই কণ্ঠস্বর আরও স্পষ্ট হয়ে শোনা যাচ্ছে
যে-কণ্ঠস্বর বলছে, ভারতবাসীকে তার সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়িত্বভার নিজের হাতে তুলে
নেবার সময় এসেছে এবং গঙ্গার তীরে ইংরেজ শাসনের আয়ু শেষ হয়ে এসেছে।”
·
“ভারতে বর্ণভেদ প্রথার গোঁড়ামী চরম
উন্মত্ততার পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
·
“মানুষের নবজন্ম, নতুন করে মানুষের শিক্ষা ... কায়িক শ্রমের
শৃংখল-মুক্ত মানুষের হাতে ... নতুন সংস্কৃতির সৃষ্টি সম্ভব একমাত্র সেই সমাজে— যেখানে সমাজতান্ত্রিক শ্রম
নতুন মানুষকে গড়ে তোলে আর নতুন মানুষ সংগঠিত করে সমাজতান্ত্রিক শ্রম।”
·
“আত্মজ্ঞানই
বিশ্বজ্ঞান, কেননা আমাদের চারদিকের এই জগৎকে না-জেনে নিজেকে জানা অসম্ভব।”
·
“আমার
কাছে ... একমাত্র মানুষই সব বস্তু, সব ভাব, সমস্ত বিস্ময়ের উৎস, সমস্ত প্রাকৃতিক
শক্তির ভবিষ্যৎ প্রভু।”
·
“নিঃসন্দেহে
শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার ক্ষেত্রে সৎ ও শ্রেষ্ঠ মানুষদের সংঘ গঠনের
প্রাক-মুহূর্তে আমরা এসে দাঁড়িয়েছি।”
·
“আমাদের
সামনে এক মহৎ, সুনির্দিষ্ট ব্রত রয়েছে— ‘পুরোনো’
পৃথিবীকে ধ্বংস করে নতুন পৃথিবী গড়ে তোলা, আমাদের শ্রমিকশ্রেণীর প্রেরণায় সে-কাজ
আজ চারিদিকে শুরু হয়েছে— পৃথিবী জুড়ে
শ্রমজীবীরা তার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।”
·
“সমস্ত
পৃথিবীতে আজ পুরোনো সমাজব্যবস্থার ভিত্তি নড়ে গেছে। তার লক্ষণ সর্বত্র— হিংসা-দ্বেষ, যন্ত্রণা-ভয়, নীতি-বর্জিত আনন্দলাভের
অসুস্থ কামনা, যৌনবিকৃতি— এই সমাজের সর্বত্র
ছেয়ে গেছে ... এই বিকৃত সমাজের দুষিত আবহাওয়া থেকে আমাদের মুক্ত হতেই হবে।”
·
“সর্বদেশেই
পুঁজিপতিশ্রেণী হচ্ছে জঘন্য রকমের মানবতাবিরোধী কিন্তু আমেরিকার পুঁজিপতিশ্রেণী
হচ্ছে তাদের মধ্যে জঘন্যতম।”
·
“মানুষ— এই তোমার সত্য! সবকিছু মানুষের মধ্যে— সবকিছু মানুষের জন্য। অস্তিত্ব আছে শুধু মানুষেরই,
আর যা কিছু তা তার হাত আর মনের সৃষ্টি। কি আশ্চর্য এই মানুষ! মানুষ— কি একটা গর্বে সুর লেগে থাকে কথাটাতে।”
·
“প্রকৃতি
আমাদের এই পৃথিবীতে নিয়ে আসে বটে, কিন্তু বাকি সবটাই আমাদের উপর ছেড়ে দেয়। আমাদের
সুবিধার জন্য যা-কিছু আমরা সৃষ্টি করি ... সব কিছুই সৃষ্টি হচ্ছে মানুষের দু-টি
হাত দিয়ে।”
·
“পৃথিবীতে
এমন কিছু নেই যা মানুষের দ্বারা নির্মিত হয়নি। অন্ততঃ ভূপৃষ্ঠের ওপরে আমরা যা দেখি
সবই আমাদের অথবা আমাদের পূর্বপুরুষের কাজের ফল”।
·
“জীবন
একটা সংগ্রাম? — হ্যাঁ। কিন্তু জীবন হওয়া উচিৎ প্রকৃতির মূল শক্তি
সমূহকে পরাভূত করে পরিচালিত করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম।”
·
“সমস্ত
পৃথিবীতেই কৃষক কম বেশী একই ভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে এবং আদিম একটা
ব্যক্তিত্বের সঙ্কীর্ণতায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে।”
·
“মানুষ
মরণশীল ... কিন্তু তার প্রয়াসের ফল বেঁচে থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী।”
·
“মানুষকে
আমি শ্রদ্ধা জানাই, কারণ আমি দেখেছি আমাদের এই পৃথিবী তারই চিন্তা-ভাব-কল্পনার
প্রকাশ।”
·
“শ্রমিকশ্রেণী
নিঃসন্দেহে নির্মাণ করতে সক্ষম হবেন সেই আদর্শ, ন্যায়ভিত্তিক ও সুন্দর পৃথিবী, যার
উপর তার পূর্ণ দাবি রয়েছে ...।”
·
“শিল্পী
হচ্ছেন তাঁর দেশ ও শ্রেণীর সংশ্লিষ্ট সবকিছুর অনুভূতিশীল গ্রহীতা— তাঁর কণ্ঠে সমকালীন যুগের প্রতিধ্বনি”।
·
“ধনতন্ত্রে
ইন্টেলেকচুয়াল রয়েছে দুই জাঁতাকলের মধ্যে, ... সাধারণতঃ তার অস্তিত্বের, তার টিঁকে
থাকার অবস্থা খুবই রূঢ় এবং কঠিন আর নাটকীয়তায় পূর্ণ। ... সেই কারণেই তার বন্দী
চিন্তাসমূহ তার নিজের জীবনের অবস্থার বোঝা তাকে সারা জগতের উপর চাপিয়ে দেওয়ায়
প্ররোচিত করে; এবং এই সমস্ত মানসিক ধারণা থেকে দার্শনিক দুঃখবাদ, সন্দেহবাদ,
নৈরাশ্যবাদ প্রভৃতি চিন্তার বিকৃতির উদ্ভব হয়।”
·
“মনে
রাখবেন যে সাহিত্যে, বিজ্ঞানে, কারিগরিশিল্পে মানুষের যা-কিছু সুন্দর, মূল্যবান
চিরস্থায়ী কীর্তি, সেগুলি যাঁরা সৃষ্টি করেছেন তাঁদের অবর্ণনীয় কঠিন অবস্থার মধ্যে
কাজ করতে হয়েছে— ‘সমাজের’
গভীর অজ্ঞতা, ... পুঁজিপতিদের অর্থলিপ্সা, শিল্পকলার তথাকথিত পৃষ্ঠপোষকদের খেয়ালী
দাবি— এ সবকিছুর বিরুদ্ধে।”
গোর্কী প্রসঙ্গে
·
“ম্যাকসিম
গোর্কী স্বীয় মানবপ্রেম ও সাহিত্য সৃষ্টি দ্বারা বিশ্বসাহিত্য ক্ষেত্রে অমর কীর্তি
রাখিয়া গিয়াছেন। তাঁহার স্মৃতির প্রতি আমি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করিতেছি।” –
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
·
“তাঁর
প্রধান লক্ষ্য ছিলো মানুষকে তার অধিকারের জন্য সংগ্রামে প্রস্তুত করা।” –
মহাত্মা গান্ধী
·
“গোর্কী
এসেছিল। ... জনগনের ভিতর থেকে উঠে-আসা খাঁটি মানুষ।” –
তলস্তয়
·
“আপনার
শিল্পকৃতি ও প্রতিভার দ্বারা আপনি রাশিয়া এবং বাইরের সমস্ত শ্রমিকশ্রেণীর বিরাট
সেবা করেছেন।” – লেনিন
·
“অত্যন্ত
দরকারি, অত্যন্ত সময়োচিত একটি বই।” – লেনিন (গোর্কী রচিত ‘মা’
প্রসঙ্গে)
·
“গোর্কীর
মতো প্রতিভা সারা পৃথিবীর সম্পদ।” – আনাতোল ফ্রাঁস
·
“তোমার
প্রতিভা সন্দেহাতীতভাবেই মহান।” – আন্তন চেখভ
·
“ম্যাকসিম
গোর্কীর জীবন একটি গতিশীল ঊর্ধরেখা; তার শুরু ... সমাজের একেবারে তলদেশে। আর
সে-রেখা এমন একটা শীর্ষে গিয়ে পৌঁছেছে, পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম মানুষই সেখানে
পৌঁছতে পেরেছেন।” – আনাতোলি লুনাচারস্কি
·
“গোর্কীকে
যেমন ভালোবাসতেন লেনিন, তেমনটি খুব কম লোককেই বাসতেন।” –
মারিয়া উলিয়ানোভা
·
“... গোর্কী পড়ার পর মনে হয়, সমাজজীবনের এমন গভীর বিশ্লেষণ গোর্কী ছাড়া অন্য কোনো
লেখকের রচনায় দেখা যায়নি।” – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
·
“অখ্যাত,
অবজ্ঞাত, পদদলিত, অসম্ভ্রান্ত মানুষকে বিশ্ব-সাহিত্যে প্রথম স্থান করে দেন তিনিই।” –
মুলক্রাজ আনন্দ্
·
“আমার
রচনায় আমি ম্যাকসিম গোর্কীর কাছে অনেকাংশে ঋণী।” –
মুলক্রাজ আনন্দ্
·
“আমি
যদি কোনো নতুন উপন্যাস লিখতে চাই, আমি হয়তো শুরু করবো গোর্কীর মানবিকতাবাদ দিয়েই।” –
মুলক্রাজ আনন্দ্
·
“মানুষ
নিজেকে বদলাতে পারে এই ধারণা প্রবর্তন করে গোর্কী সমাজ-পরিবর্তনের অনুকূল আবহাওয়া
রচনা করেছিলেন বলেই রুশ-বিপ্লব তরুণ সমাজের চেতনাকে অনুপ্রাণিত করতে পেরেছিল।” –
মুলক্রাজ আনন্দ্
·
“গোর্কী
নিপীড়িত মানুষের একজন হয়ে তাদের কথা লিখেছেন। শুধু রুশ-সাহিত্যের নয়, গোর্কীর অবদান সমগ্র বিশ্ব-সাহিত্যে।” –
প্রেমেন্দ্র মিত্র
·
“জীবনের
তিক্ততার সঙ্গে পরিচয় লাভ করে গোর্কী জীবনকে তিক্ততা-মুক্ত করার জন্য
স্থিরপ্রতিজ্ঞ ছিলেন।” – সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
·
“মানুষ
অজেয়— এই ছিল গোর্কীর বাণী।” –
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
No comments:
Post a Comment