অরুণাচল বসু
জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৩ (২৬ ভাদ্র ১৩৩০) বুধবার,
অধুনা বাংলাদেশের যশোহর জেলার ডোঙ্গাঘাটা গ্রামে
বিবাহ: ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৪ (১৬ মাঘ ১৩৫০) রবিবার
মৃত্যু: ২৪ জুলাই ১৯৭৫ (৭ শ্রাবণ ১৩৮২) বৃহস্পতিবার, কলকাতার এম.আর. বাঙ্গুর
হাসপাতালে
প্রথম জীবনে তাঁর নাম ছিল ‘অরুণ’, পরে নিজেই তা পরিবর্তন করে ‘অরুণাচল’ করেন (সুকান্তর ২৪ মে ১৯৪৬-এর চিঠির ঠিকানাতে প্রথম এই নাম লক্ষ করা যায়); বাড়িতে তাকে ডাকা হ'ত ‘নানু’ বলে।
ঘটনাপ্রবাহ
১৯৩৫: যশোহর থেকে কলকাতায় আগমন এবং বেলেঘাটা অঞ্চলে
বসবাস – ১৯৪৬ পর্যন্ত (২২ বাহিরশুঁড়া রোড, বেলেঘাটা গার্লস স্কুলের কোয়ার্টার, ১৮
কলিমুদ্দি সরকার লেন, ১৪৮ বেলেঘাটা মেন রোড, ১৮সি বেলেঘাটা মেন রোড)
১৯৪১: বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি
এবং সুকান্ত ভট্টাচার্যের সাহচর্য লাভ
১৯৩৯: প্রথম কবিতা প্রকাশ
– ঠাকুর পরিবারের হেমলতা দেবী সম্পাদিত ‘বঙ্গলক্ষ্মী’ পত্রিকায়, যার একটি পংক্তি ছিল "কাঁদে মেয়ে কাঁদে নদী ছল-ছল স্রোতে"
১৯৪১: প্রথম কবি পরিচিতি – সুকান্ত ও অরুণাচলের যুগ্মসম্পাদনায় প্রকাশিত
সপ্তম শ্রেণির হাতেলেখা পত্রিকা ‘সপ্তমিকা’য়
১৯৪২: শ্রীঅর্ণব ছদ্মনামে অল্প-কিছু লেখালেখি এবং সামান্য কিছুদিনের
জন্য পাবনার সৎসঙ্গ আশ্রমে আধ্যাত্মবাদ চর্চা
১৯৪২: বেলেঘাটার ‘প্রগতিশীল লেখক-শিল্পী সংঘ’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা
১৯৪৩: যশোহরে প্রকাশ করেন ‘ত্রিদিব’ পত্রিকা
১৯৪৪: কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান – এ সম্পর্ক অটুট ছিল পার্টির বিভাজনের পরে অল্প কিছুকাল পর্যন্ত
১৯৪৬: ‘স্বাধীনতা’ পত্রিকার ‘কিশোর সভা’ বিভাগে কার্টুন আঁকতেন – এই বিভাগটির সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন সুকান্ত
১৯৪৭: দক্ষিণ কলকাতার মুর এভিনিউয়ে বসবাস শুরু – পরে ঐ অঞ্চলের আশেপাশেই বছর তিনেক বসবাস
১৯৪৭: বেলেঘাটায় ‘শিল্পী সভা’ গঠনের – অন্যতম কান্ডারি (কয়েক বছর
পরে ‘শিল্পী সভা’র হয়েই তিনি অভিনয় করেন
লেডি গ্রেগরির ‘রাইজিং ইন দ্য মুন’ অবলম্বনে সলিল চৌধুরী অনূদিত ‘অরুণোদয়ের পথে’ নাটকে)
১৯৪৮: এপ্রিল মাসে দৈনিক ‘পশ্চিমবঙ্গ’ পত্রিকায় সিনিয়র প্রুফরিডারের চাকরিতে যোগদান
১৯৪৮: ১৩ নভেম্বর রচনা করেন জওহরলাল বিরোধী কবিতা ‘পণ্ডিতজীর জন্মদিনে’
১৯৪৯: ‘দেশ’ পত্রিকায় ‘পণ্ডিতজীর জন্মদিনে’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে কবির নামে ওয়ারেন্ট বের হয় এবং তিনি অধুনা বাংলাদেশের
মসিয়াহাটিতে বন্ধু অধীর বিশ্বাসের মেসে আশ্রয় নেন
১৯৪৯: মসিয়াহাটির কৃষক এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান
১৯৫০: যাদবপুরে নিজেদের বাড়িতে পাকাপাকিভাবে বসবাস
শুরু (১৪১/৭ প্রিন্স গোলাম হোসেন শাহ্ রোড, কলকাতা – ৭০০০৩২; এই বাড়িরই অন্য একটি ঠিকানা : এ/৫, ২নং পোদ্দারনগর কলোনি, যাদবপুর, কলকাতা – ৭০০০৩২)
১৯৫৩: নামি অনামি লেখক ও কবিদের নিয়ে যাদবপুরে গড়ে
তোলেন ‘সাহিত্য সভা’
১৯৫৫: প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পলাশের কাল’ প্রকাশ
১৯৫৭: দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দূরান্ত রাধা’ প্রকাশ
১৯৬১: সুধীর মুখার্জী পরিচালিত ‘দাদাঠাকুর’ চলচ্চিত্রে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় – চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৬২ সালে
১৯৬২: বর্ধমানে স্থানীয় লেখক ও কবিদের সঙ্গে যোগাযোগ
এবং সাহিত্যিক আড্ডা শুরুর প্রস্তুতি
১৯৬৩: মা সরলা বসুর সঙ্গে লেখা সুকান্ত স্মৃতিকথা ‘কবি-কিশোর সুকান্ত’ প্রকাশ
১৯৬৩: গ্রাম-শহরের কয়েকজন অপরিচিত লেখককে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমানে ‘সাহিত্য মজলিস’ প্রতিষ্ঠা করেন, পরে যা ‘নতুন সংস্কৃতি’ নামে পরিচিতি লাভ করে – কলকাতায় (৫এ ইব্রাহিমপুর রোড) ছিল যার সংগীত বিভাগ এবং বর্ধমানে (১নং
শ্যামবাজার লেন) ছিল সাহিত্য বিভাগ (কেন্দ্রীয় কার্যদপ্তর ছিল যাদবপুরে কবির বাড়িতে – ১৪১/৭ প্রিন্স গোলাম হোসেন শাহ্ রোডে)
১৯৬৪: ‘সাহিত্য মজলিস’-এর প্রথম বর্ষপূর্তি
অনুষ্ঠান ৮ নভেম্বর বর্ধমান টাউন হলে
১৯৬৬: ‘নতুন সংস্কৃতি’র নিজস্ব সাহিত্য সংকলন ‘প্রতীতি’র সম্পাদনা
১৯৬৭: কলকাতা ও বর্ধমানের সভ্য-সভ্যা এবং অতিথিদের নিয়ে ‘নতুন সংস্কৃতি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত করলেন বর্ধমান টাউন হলে ১৬ ও ১৭ এপ্রিল
১৯৬৮: ম্যাক্সিম গোর্কির জন্মশতবার্ষিকী সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে বর্ধমানে আত্মপ্রকাশ ঘটলো ‘নতুন সংস্কৃতি’র সংগীত বিভাগের
১৯৭২: ‘নতুন সংস্কৃতি’র নিজস্ব প্রযোজনায় ‘আধুনিক বাংলা কবিতার সংগীতরূপ’ অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা ১লা মে বালিগঞ্জ শিক্ষাসদনের খেমকা হলে
১৯৭৪: ‘নতুন
সংস্কৃতি’র শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান ‘আধুনিক বাংলা কবিতার সংগীতরূপ’ ও তৎসহ কবি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ৩০ এপ্রিল কলকাতার
রবীন্দ্র সদনে – এই অনুষ্ঠানটি বিদ্বজ্জনের
বহুল প্রসংশা অর্জন করেছিল
১৯৭৪: ‘নতুন সংস্কৃতি’র শেষ অনুষ্ঠান ২২ ডিসেম্বর কলকাতা তথ্যকেন্দ্রে সুকান্ত মূল্যায়ন সম্পর্কিত
অনুষ্ঠানে। (সম্ভবতঃ বছর দু-এক বাদে কলকাতা দুরদর্শনে স্মরণসভা জাতীয় কোন অনুষ্ঠান হয়ে ছিল।)
অন্যান্য
জীবিকা
Ø প্রাইভেট টিউটর
Ø কাচের কারখানার
ক্যারিয়ার বয়
Ø সিভিক গার্ড
Ø এ.আর.পি. (জুট মিলে)
Ø কমার্শিয়াল
আর্টিস্ট (হিন্দি দৈনিক ‘জাগৃতি’ এবং বাণিজ্য কলাসদন)
Ø সিনেমার সহকারী
শিল্পনির্দেশক ও গীতিকার – এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে ‘সাহারা’ চলচ্চিত্রে খগেন দাশগুপ্তর সুরে কবির ‘ঝুম ঝুম নিঃঝুম রাত্রি’ গানটি গেয়েছিলেন হেমন্ত
মুখোপাধ্যায়
Ø টেলারিং ও ডাই
ক্লিনিং ‘দ্য প্রোগ্রেসিভ’-এর মালিক – যদিও এটি খুব বেশিদিন চালাতে
সক্ষম হননি কিন্তু দোকানে রবীন্দ্রনাথের একটি ছবি টাঙাতে ভুল করেননি
Ø ট্রেনে ‘সোভিয়েত দেশ’ পত্রিকার হকার
Ø দুগ্ধ ব্যবসায়ী
– নিজেই গোয়ালা
Ø প্রকাশকের
দোকানে প্রুফরিডার ও অনুবাদ গ্রন্থের পরীক্ষক (এন.বি.এ. এবং নাভানা)
Ø ‘সোভিয়েত দেশ’ পত্রিকায়
কবিতা ও প্রবন্ধের অনুবাদক – এই সময়েই ‘ফুটবল খেলার
আইন কানুন’ নামক রাশিয়ান বইটির অনুবাদ করেন
Ø রুশ ছাত্রের
বাংলা কবিতার শিক্ষক
Ø ‘স্বাধীনতা’ সংবাদপত্রে
প্রুফরিডার
Ø ‘কালান্তর’ পত্রিকায়
চাকরি
অরুণাচল বসুর ডায়ারি এবং বিভিন্ন লেখা থেকেই এই
জীবিকাগুলির কথা জানা যায়; উপরোক্ত সমস্ত জীবিকাই অস্থায়ী এবং স্বল্প সময়ের।
অন্যান্য
গ্রন্থ ও ব্লগ
১৯৮৭: সুকান্ত স্মৃতিকথা ‘সুকান্ত : জীবন ও কাব্য’ প্রকাশ
২০০২: কবিতা, গান ও অনুবাদ কবিতার সংকলন ‘অরুণাচল বসুর সংকলিত কবিতা’ প্রকাশ
২০১৬: এই ব্লগটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হ'ল জানুয়ারির ২৭ তারিখে – ব্লগটির জন্য যে-কোনরকম
উপদেশ বা তথ্য সাগ্রহে গৃহীত হবে।
No comments:
Post a Comment